728x90 AdSpace

  • Latest News

    সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং পবিত্র মীলাদ শরীফ ও উনার ইতিহাস ও গুরুত্ব।

    সব ছানা-ছিফত মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। উনার সর্বোত্তম ছানা-ছিফত করেছেন আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। তিনি বলেন- “আয় মহান আল্লাহ পাক, আপনি তো ওই রকমই, যেমনটি নিজেকে নিজে বর্ণনা করেছেন।” আর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত সম্পর্কে বলা হয়- তিনি তো ওই রকমই, যেমনটি স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি বর্ণনা করেছেন। সবাই অবগত যে, এ মহান সৃষ্টি অর্থাৎ আকরামুল আওয়ালীন ওয়াল আখিরীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনের দিন হিসেবে পবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ দিবসটি- সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবার হিসেবে তথা মহিমান্বিত পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিসেবে মশহুর। মর্যাদার দিক থেকে যা পবিত্র শবে বরাত উনার চেয়ে অনেক বেশি রহমতপূর্ণ, পবিত্র শবে ক্বদর উনার চেয়ে অনেক বেশি ফযীলতযুক্ত; এমনকি দুই ঈদের চেয়েও অনেক বেশি ঈদ যে দিনটিতে সন্নিবেশিত। কুল-মাখলুকাতে পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফরূপে এ দিন মুবারকটি সর্বাপেক্ষা বেশি সম্মানিত ও সমাদৃত।

    সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ঈদ কেবল ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ উনার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। মুসলমানগণের অন্য দুটি ঈদ- ‘পবিত্র ঈদুল ফিতর’ ও ‘পবিত্র ঈদুল আদ্বহা’ নির্দিষ্ট দিনে গ-িভুক্ত থাকলেও সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ‘ঈদ’ তথা খুশি প্রকাশের কেবল শুরুই রয়েছে। কিন্তু তার স্থিতি অনন্তকালের জন্য। সে খুশি প্রকাশ মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে অত্যন্ত মকবুল আমলরূপে গৃহীত।
    মূলত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপনের ঘনঘটা, ব্যাপকতা, প্রাচুর্যতা এমনকি দায়সারা মানসিকতা উম্মত হিসেবে সরদারে দো’জাঁহা, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি আমাদের অন্তরের টানের তথা মুহব্বতের মাপকাঠির সূচক নির্দেশ করে। যদিও কম সমঝ, কম আক্বলধারী একটি মহল দুরভিসন্ধিমূলকভাবে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালনের প্রতি বিষোদগার করে থাকে। নাঊযুবিল্লাহ!
    তারা বলে- পবিত্র বিলাদত শরীফ পালন খ্রিস্টানদের ‘ক্রিসমাস ডে’ এবং হিন্দুদের ‘জন্মাষ্টমী’ পালনের শামিল। নাঊযুবিল্লাহ!
    সত্যিকার অর্থে তাদের এ কথাটি আদৌ শুদ্ধ নয়; বরং অজ্ঞতা ও ধৃষ্টতামূলক। কারণ জন্ম-মৃত্যু বিয়েসহ কিছু মৌলিক বিষয়াদি আছে- যা জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সবারই মানবিক অনুভূতি। জন্ম বা বিয়েতে আনন্দ এবং মৃত্যুতে শোক প্রকাশের অনুভূতিকে রুদ্ধ করা সৃষ্টির শান বিরোধী বা স্বভাব বিরোধী কাজ। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বলা হয়েছে, ‘পবিত্র দ্বীন ইসলাম ফিতরাত উনার দ্বীন বা স্বাভাবিকতার ধর্ম’।
    উল্লেখ্য, যারা বলছে যে- খ্রিস্টানদের থেকে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পালনের ধারা এসেছে, তাদের আদৌ কোনো দলীল নেই। বরং ধর্ম প্রবর্তকের জন্ম দিন পালন প্রত্যেক ধর্মেরই স্ব স্ব বৈশিষ্ট্য। এক্ষেত্রে মূলত জন্মদিন উদযাপনে নিষেধাজ্ঞা নয়, বরং উদযাপনের পদ্ধতিটি সম্মানিত ইসলামী হয় কিনা- সে বিষয়ে খেয়াল রাখা বাঞ্ছনীয়। এ বিষয়ে Encyclopedia Americana’তে বলা হয়েছে,
    Oraganized religions, such as Christianity, Islam and Hinduism Celebrate the birth dates of their founders. (Encyclopedia Americana) “খ্রিস্টানরা এবং হিন্দুরাও তাদের ধর্ম প্রবর্তকের নামে জন্মদিন পালন করে”
    এজন্য পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে জন্মদিন পালন করা যাবে না- এ কথার উদাহরণটা হচ্ছে যে, খ্রিস্টান ও হিন্দু ধর্মে বাবা-মার প্রতি দায়িত্ব কর্তব্য পালনের কথা আছে। সুতরাং মুসলমান হতে হলে বাবা-মার প্রতি দায়িত্ব কর্তব্য বাদ দিতে হবে?
    উল্লেখ্য, কথিত রেনেসাঁর যুগে খ্রিস্টানদের একটি মহল বরং ক্রিসমাস পালন করাকে অধর্মীয় মনে করতো এবং এ অনুভূতির কারণে ১৬০০ ঈসায়ী সনে ইংল্যান্ড ও আমেরিকার কিছু অংশে তা নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়ে যায়। যেমন-
    During The Reformation Many Christians began to consider christmas a non religious coustoms. During the 1600’s, because of these feelings, Christmas was outlawed in England and in parts of the British colonies in America. (The World Book Encyclpedia:3)
    পাশাপাশি Encyclopaedia Britannica-তে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে এভাবেÑ
    Mawlid, also spelled MAWLUD or MILAD in islam especially the birthday of the Prophet Muhammad (Mawlid an-Nabi)
    লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে যে, বিশ্বব্যাপী চালু খ্রিস্টানদের এই বৃহৎ রেফারেন্স বইয়ে স্পষ্টভাবেই উল্লেখ আছে যে, সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উনাকেই বোঝায়। অথবা পবিত্র মীলাদ শরীফ বলতে পবিত্র বিলাদত শরীফ সম্পর্কিত উনার আলোচনাকেই বোঝায়। বরং পবিত্র মীলাদ শরীফ যে খ্রিস্টানদের বিরোধী প্রথা, সে সম্পর্কে খ্রিস্টানদের ওই বইয়েই লেখা রয়েছে- “The mawlid indeed betrayed a Christian influence.”
    উল্লেখ্য, এসব দুনিয়াবী দলীলের বাইরে খোদ পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যেই হযরত নবী আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের আগমন দিন বা পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার দিন উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করা সম্পর্কে বলা হয়েছে, “উনার প্রতি সালাম (রহমত, বরকত ও সাকীনা), যেদিন তিনি আগমন করেন এবং যেদিন তিনি পবিত্র বিছাল শরীফ উনাকে গ্রহণ করবেন এবং যেদিন তিনি পুনঃরুত্থিত হবেন।” (পবিত্র সূরা মরিয়ম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫)
    “সালাম (রহমত, বরকত ও সাকীনা) আমার প্রতি, যেদিন আমি আগমন করেছি, যেদিন পবিত্র বিছাল গ্রহণ করবো ও যেদিন জীবিত অবস্থায় পুনঃরুত্থিত হবো।” (পবিত্র সূরা মরিয়ম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)
    বর্ণিত পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের মধ্যে হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম ও হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনাদের আগমন, পবিত্র বিছাল শরীফ ও পুনঃরুত্থান প্রত্যেকটাই সালাম, রহমত, বরকত ও সাকীনা উনাদের কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
    যদি তাই হয়, তাহলে যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল, মুরসালীন, রহমতুল্লিল আ’লামীন খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- যাঁকে সৃষ্টি না করলে মহান আল্লাহ পাক তিনি কিছুই সৃষ্টি করতেন না; উনার আগমন, বিদায় ও পুনঃরুত্থান দিবস যে কতটুকু ছলাত, সালাম, রহমত, বরকত ও সাকীনা উনাদের কারণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
    উল্লেখ্য, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেও নিজের বিলাদত শরীফ উনার দিনকে মূল্যায়ন করেছেন। তিনি নিজেও নিজের বিলাদত শরীফ উনার উপর খুশি হয়ে পরবর্তীতে নিজের মুবারক আক্বীকা নিজেই দিয়েছেন এবং ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “তোমরা ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম বা সোমবার শরীফ পবিত্র রোযা রাখ। কারণ ওই দিন আমার পবিত্র বিলাদত শরীফ হয়েছে।” (মুসলিম শরীফ)
    তাছাড়া নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই নিজের মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পালনার্থে খুশি প্রকাশ করে ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি হলাম হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার দোয়া, হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার সুসংবাদ এবং আমার আম্মাজান হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনার দেখা সুস্বপ্ন মুবারক ও অলৌকিক ঘটনার বাস্তব প্রতিফলন।”
    মূলত, পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এবং সর্বজনমান্য বিশ্বখ্যাত কিতাবসমূহের অসংখ্য দলীলের মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উপলক্ষে জান্নাত ও জান্নাতী হূর-গেলমান থেকে শুরু করে আসমান-যমীনসহ সমস্ত কায়িনাতকে অপরূপ বৈচিত্র্যে সাজিয়ে সমস্ত সৃষ্টিকে নিয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে উদযাপন ও খুশি প্রকাশ করেছেন, করছেন ও অনন্তকালব্যাপী করতেই থাকবেন। সুবহানাল্লাহ!
    তাহলে সেই মহান ঈদ বা খুশি পালন জিন-ইনসানের জন্য কত বড় শ্রেষ্ঠতম ঈদ বা খুশি! তা কস্মিনকালেও মাখলুকাতের পক্ষে বর্ণনা করে শেষ করা সম্ভব হবে না। কাজেই জিন-ইনসানসহ সমস্ত কায়িনাতবাসীর জন্য অপরিহার্য দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে: অনন্তকালব্যাপী সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর তথা সকল ঈদের সেরা বা শ্রেষ্ঠতম ঈদ হচ্ছে পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পালন করা, উদযাপনে যথাযথ খুশি প্রকাশ করা, যা কুল-মাখলুকাতের সকলের জন্য ফরযে আইন ও নাজাতের একমাত্র সোপান।
    মূলত এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে পবিত্র ঈমান ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাদের অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর এর জন্য চাই নেক ছোহবত তথা মুবারক ফয়েজ, তাওয়াজ্জুহ। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবতেই সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)

    • Blogger Comments
    • Facebook Comments

    0 মন্তব্য(গুলি):

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    Item Reviewed: সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং পবিত্র মীলাদ শরীফ ও উনার ইতিহাস ও গুরুত্ব। Rating: 5 Reviewed By: Baitul Hikmah
    Scroll to Top