728x90 AdSpace

  • Latest News

    পবিত্র মি’রাজ শরীফ;যা চিরন্তন সত্য; যা অস্বীকার করায় মিশরের বাদশাহর সামান্য সময়ে সাতটি সন্তান লাভ।

    সৃষ্টির মাঝে সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় মুবারক হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূরানী সশরীর মুবারক-এ পবিত্র মি’রাজ শরীফ;যা চিরন্তন সত্য; যা অস্বীকার করায় মিশরের বাদশাহর সামান্য সময়ে সাতটি সন্তান লাভ।


    মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে রাতে পবিত্র বাইতুল্লাহ শরীফ থেকে পবিত্র বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ পর্যন্ত ভ্রমণ করিয়েছেন। অতঃপর মুবারক দীদার দিয়েছেন। فكان قاب قوسين او ادنى অর্থ: দু’ধনুকের যতটুকু ব্যবধান এই পরিমাণ অথবা এর চেয়েও আরো অধিক নিকটবর্তী হলেন। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা নজম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৯)
    মূলত এটিই হচ্ছে পবিত্র মি’রাজ শরীফ। পবিত্র মি’রাজ শরীফ বিশ্বাস করা হচ্ছে ফরয আর অবিশ্বাস করা কাট্টা কুফরী। আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম তিনি একজন কাফিরের মুখে পবিত্র মি’রাজ শরীফ উনার কথা শুনে বিনা চু-চেরায় বিশ্বাস করলেন। যার ফলশ্রুতিতে মহান আল্লাহ পাক উনাকে ‘ছিদ্দীক্ব’ লক্বব মুবারক হাদিয়া করলেন। সুবহানাল্লাহ!
    অবিশ্বাসকারীদের জন্য অনেক মশহুর মশহুর ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল। যেমন- পবিত্র মি’রাজ শরীফ অস্বীকার করার কারণে এক ইহুদী- সে পুরুষ থেকে মহিলায় পরিণত হয়ে অতি অল্প সময়ে ৭টি সন্তানের মা হয়ে যায়। এরূপ অনেক ঘটনা রয়েছে। তন্মধ্যে একটি মশহুর ওয়াকিয়া এখানে উল্লেখ করা হলো তা হচ্ছে, কিতাবে বর্ণিত আছে যে, হযরত শায়েখ শিহাবুদ্দীন সোহরাওয়ার্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মা হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুরীদ ছিলেন। তিনি নিঃসন্তান বলে আরজু পেশ করায় হযরত পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি দোয়া করলেন; যার ফলে উনার একটি কন্যা সন্তান হলো। তিনি সেই সন্তানটিকে হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কাছে নিয়ে এসে বললেন, হুযূর! নিয়ত করেছিলাম পুত্র সন্তান হলে আপনার খিদমতে পেশ করবো। হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সেই কন্যা সন্তানটির প্রতি নেক দৃষ্টি দিলেন। উনার ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ ও কারামতে বাচ্চা মেয়েটি ছেলে সন্তানে পরিণত হয়ে গেল। পরবর্তীতে তিনিই মহান আল্লাহ পাক উনার বুযূর্গ ওলীআল্লাহ হলেন।
    ৬০০ হিজরী সনের কাছাকাছি সময়ের ঘটনা। মিশরের বাদশাহ ছিল মুসলমান। কিন্তু সে পবিত্র মি’রাজ শরীফ বিশ্বাস করতো না। হযরত শায়েখ শিহাবুদ্দীন সোহরাওয়ার্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এ কথা জানার পর মিশরে গেলেন বাদশাহকে বুঝাবার জন্য। মিশরের বাদশাহ, আলিম, উলামা, ছূফি, দরবেশ, উজির, নাযীর, পাইক, পেয়াদা নিয়ে উপস্থিত হলো। তাদেরকে একটি ঘরে বসানো হলো যার চারদিকে চারটি জানালা ছিল বন্ধ। একটি জানালা খুললে দেখা গেলো দাউ দাউ করে আগুন বাদশাহর দিকে ধেয়ে আসছে। বাদশাহ আগুন! আগুন বলে চিৎকার করার পর জানালা বদ্ধ করে পুনরায় খুলে দেখতে পেলো সব ঠিক। এভাবে সে আরেকটি জানালা খুললে দেখতে পেল নীলনদের পানি উত্তালভাবে ফুঁসে ধেয়ে আসছে। বাদশাহ পানি, পানি বলে চিৎকার করতে লাগলো। এরপর জানালা বন্ধ করে পুনরায় খুলে দেখতে পেল সবই ঠিক আছে। এভাবে আরেকটি খুললে দেখলো ঢাল-তালোয়ার নিয়ে অনেক সৈন্য সামন্ত পঙ্গপালের ন্যায় ছুটে আসছে। বাদশাহ আবার বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করে জানালা বন্ধ করে পুনরায় খোলার পর দেখলো সবই ঠিক রয়েছে। আবার এভাবে আরেকটি জানালা খুললে দেখলো ফল-ফুলে পরিপূর্ণ একটি সুন্দর বাগান। এরপর হযরত শেখ শিহাবুদ্দীন সোহরাওয়ার্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একটি পানি ভর্তি বড় গামলা এনে বাদশাহকে ওই গামলার মধ্যে দৃষ্টিপাত করতে বললেন, বাদশাহ দৃষ্টিপাত করার সাথে সাথে উধাও হয়ে গেল। কিছুক্ষণ পর সে নিজেকে দেখতে পেল এক সমুদ্রের পাড়ে, সারা শরীরে কাদা মাখানো- নোংরা। মনে হচ্ছে ডুবন্ত জাহাজ থেকে পড়ে কোনো রকমে জীবন বাঁচিয়েছে। এরপর এক ব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎ হলো। সে তাকে জামা-কাপড় দিয়ে বললো, ময়লা নোংরা কাপড়ে এই শহরে প্রবেশ করা যাবে না। সে কাপড় পাল্টিয়ে শহরে প্রবেশ করলো।
    পরক্ষণে সেই লোকটি আবার বললো, এভাবে ঘুরাঘুরি না করে হাম্মামখানার কাছে যাও। এই শহরের নিয়ম হলো হাম্মামখানা থেকে মেয়েরা গোসল করে বের হওয়ার পথে যাকে পছন্দ হবে বিয়ের প্রস্তাব দিতে হবে। সেই কথা মুতাবিক বাদশাহ দাঁড়িয়ে রইলো। কিছুক্ষণ পর এক মেয়েকে দেখে সে বিয়ের প্রস্তাব দিলো। মেয়েটি কিছু না বলে বাড়ি গিয়ে লোক পাঠালো। তার লোকেরা এসে বাদশাহকে মেয়েটির বাড়ি নিয়ে বিয়ে দিয়ে দিলো। মেয়েটি সম্পদশালীনী হওয়ায় বাদশাহর কাজ-কর্ম কিছুই করা লাগতো না। বসে বসে খেয়ে সাত বছর পার করে দিলো। সাত বছরে তার সাতটি সন্তান হলো। এরপর তার অভাব দেখা দিলে তার স্ত্রী তাকে কাজ করার কথা বললো; কিন্তু সে তো কোনো কাজই জানে না। সে মনে মনে চিন্তা করলো, শহরে প্রবেশের সময় যেই লোকের সাথে দেখা হয়েছে তার পরামর্শ নিবে। লোকটির সাথে দেখা হলে সে বাদশাহকে বলল, মুটে বা কুলি হলে সহজে কিছু পয়সা মিলবে। তার কথামতো বাদশাহ কুলিগিরি করে যা উপার্জন করলো তাতে তাদের ঠিকমত খাবারই জুটলো না। তখন বাদশাহ নদী পাড়ে গিয়ে বিড়বিড় করে বলতে লাগলো কেন এতো কষ্ট দিলেন ওই বুযুর্গ ব্যক্তি! উনাাকে পেয়ে নিই, আমাকে বুঝিয়ে বললেই তো পবিত্র মি’রাজ শরীফ বিশ্বাস করতাম। এরপর হঠাৎ বাদশাহ পুনরায় তার আগের স্থানে চলে এলো; সেই ঘরে যেখানে পানি ভর্তি গামলা ও লোকজন ছিল। তারা বাদশাহকে দেখে বললো আপনি চোখের পলকে কোথায় গেলেন আবার ফিরে এলেন! বাদশাহ তার সৈন্য-সামন্ত, উজির-নাযীরদের বললো, হযরত শায়েখ শিহাবুদ্দীন সোহরাওয়ার্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বন্দি করো। তিনি আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছেন। হযরত শায়েখ শিহাবুদ্দীন সোহরাওয়ার্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি গায়েব হয়ে চলে গেলেন সিরিয়ায়। সেখানে গিয়ে বাদশাহর কাছে চিঠি পাঠালেন- বাদশাহ দুনিয়ার মানুষের চোখের সামনে কয়েক সেকেন্ডে সাত বছর পার করে ফেললেন, সাতটি সন্তান হলো।
    হযরত শায়েখ শিহাবুদ্দীন সোহরাওয়ার্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, আপনার মতো একজন সাধারণ উম্মতের পক্ষে যদি সংক্ষিপ্ত সময়ে এতোবড় ঘটনা সংঘটিত হয়; তাহলে যিনি হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাইয়্যিদ। যিনি পবিত্র জান্নাত-পুলসিরাতের, পবিত্র হাউজে কাউছার মুবারক উনার মালিক। তিনি যে অতি অল্প সময়ে অবশ্য অবশ্যই পবিত্র মি’রাজ শরীফ করেছেন, মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে মুবারক সাক্ষাৎ করেছেন, পবিত্র আরশ-কুরসী, পবিত্র লৌহ-কলম, বেহেশত-দোযখ, পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস শরীফ ঘুরে এসেছেন- এতে কী কোনো সন্দেহ আছে? এ ঘটনার পর বাদশাহ পবিত্র মি’রাজ শরীফ বিশ্বাস করে।
    কাজেই পবিত্র মি’রাজ শরীফ পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারাই প্রমাণিত, যা সত্য এবং চিরন্তন সত্য যা অস্বীকার করা কাট্টা কুফরী। আয় আল্লাহ পাক! আমাদেরকে এ সুমহান মি’রাজ শরীফ সম্পর্কে বিশুদ্ধ আক্বীদা পোষণ করার তাওফীক দান করুন এবং উনার পূর্ণ হিচ্ছা মুবারক নছীব করুন। (আমীন)
    • Blogger Comments
    • Facebook Comments

    0 মন্তব্য(গুলি):

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    Item Reviewed: পবিত্র মি’রাজ শরীফ;যা চিরন্তন সত্য; যা অস্বীকার করায় মিশরের বাদশাহর সামান্য সময়ে সাতটি সন্তান লাভ। Rating: 5 Reviewed By: Baitul Hikmah
    Scroll to Top