শরীয়তের দৃষ্টিতে ‘মা দিবস’সহ বিধর্মীদের প্রবর্তিত সমস্ত দিবসগুলি পালন করা সম্পূর্ণরূপে হারাম ও কাট্টা কুফরী।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি যা নাযিল বা আদেশ করেছেন তা পালন করো।’
আশ্চর্যের বিষয়, মহান আল্লাহ পাক তিনি আদেশ করার পরও মুসলমানগণ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ বর্ণিত দিবসসমূহ পালন না করে কাফির মুশরিক তথা বিধর্মীদের কর্তৃক প্রবর্তিত দিবসসমূহ যেমন মা দিবস, বাবা দিবস ইত্যাদি কুফরী সম্বলিত দিবসসমূহ পালন করার জন্য ব্যাকুল হচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ!
আশ্চর্যের বিষয়, মহান আল্লাহ পাক তিনি আদেশ করার পরও মুসলমানগণ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ বর্ণিত দিবসসমূহ পালন না করে কাফির মুশরিক তথা বিধর্মীদের কর্তৃক প্রবর্তিত দিবসসমূহ যেমন মা দিবস, বাবা দিবস ইত্যাদি কুফরী সম্বলিত দিবসসমূহ পালন করার জন্য ব্যাকুল হচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ!
অতএব, মুসলমানগণকে মনে রাখতে হবে-শরীয়তের দৃষ্টিতে ‘মা দিবস’সহ বিধর্মীদের প্রবর্তিত সমস্ত দিবসগুলি পালন করা সম্পূর্ণরূপে হারাম ও কাট্টা কুফরী।
কেননা এ সমস্ত দিবসগুলি ইসলামী কোনো আদর্শ নয়; বরং সম্পূর্ণরূপে বেদ্বীনী ও বিজাতীয় আদর্শ প্রকৃতপক্ষে ইহুদী-খ্রিস্টান তথা সকল বিধর্মীরা তথাকথিত ‘মা দিবস’-এর মাধ্যমে মুসলমানদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের থেকে গাফিল করে কাফির-মুশরিকদের দিকে রুজু করতে চায়। কাজেই, আগামীকাল যারা ‘মা দিবস’ পালন করবে তারা কবীরাহ গুনাহ ও কুফরী করবে।
তাই ‘মা দিবস’ পালন করা থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মুসলমান পুরুষ ও মহিলার জন্য ফরয-ওয়াজিব।
তাই ‘মা দিবস’ পালন করা থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মুসলমান পুরুষ ও মহিলার জন্য ফরয-ওয়াজিব।
হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে সে তাদের দলভুক্ত এবং তার হাশর-নশর তাদের সাথেই হবে।”
মা দিবসের উৎপত্তি, আদর্শ ও সংস্কৃতি কোনোটাই মুসলমান বা ইসলামের তরফ থেকে নয়। বরং ‘মা দিবসের’ উৎপত্তিকারক হচ্ছে- ইহুদী-নাছারা, বেদ্বীন-বদদ্বীন তথা কাফির মুশরিকরা। আর ইসলামের দৃষ্টিতে এমন কোনো কাজ করা যাবে না যা কাফির-মুশরিকদের সাথে সাদৃশ্য রাখে। এজন্য আশূরার রোযা একদিন রাখা নিষেধ বা মাকরূহ। কারণ সেদিন ইহুদীরাও রোযা রাখে।
মা দিবসের উৎপত্তি ও ইতিহাস :
ব্রিটেনেই প্রথম শুরু হয় মা দিবস পালনের রেওয়াজ। প্রতি বছর মে মাসেরচতুর্থ রোববারকে মাদারিং সানডে হিসেবে পালন করা হতো ব্রিটেনে। এটাসতেরো শতকের কথা। এদিন ব্রিটিশরা নিজ নিজ মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানাত।মায়ের সঙ্গে সময় দেয়া ও মায়ের জন্য গিফট কেনা ছিল দিনটির কর্মসূচিতে।এরপর আমেরিকার পশ্চিম ভার্জিনিয়াতে প্রথম মা দিবস পালন করা হয় ১৮৫৮সালে। জুনের ২ তারিখকে তারা বেছে নিয়েছিল মা দিবস হিসেবে।
ফিলাডেলফিয়ার অ্যানা জারভিস ১৮৬৮ সালে গৃহযুদ্ধ আক্রান্ত পরিবারগুলোকেএকত্রিত করেছিলো। তাদেরকে মায়ের মমতা দিয়ে যুদ্ধের শোক ভোলানোরচেষ্টা করেছিলো সে। তখন সে সবার কাছে পরিচিত হয়েছিলে মা হিসেবে। ১৯০৭ সালে মে মাসে দ্বিতীয় রোববার মারা যায় অ্যানা জারভিস। ১৯১৪ সালে প্রেসিডেন্ট উড্রারো উইলসন অ্যানার সম্মানার্থে প্রতি মে মাসেরদ্বিতীয় রোববারকে ‘জাতীয় মা দিবস’ হিসাবে চিহ্নিত করে।
মা দিবস পালন মূলত পাশ্চাত্য হতে আমদানিকৃত অন্যান্য ফ্যাশনের মতো একটি বিজাতীয় ফ্যাশন। থার্টি ফার্স্ট নাইট, ভ্যালেন্টাইন ডে’র মতো এটাও একটি পাশ্চাত্য বিজাতীয় সংস্কৃতি। মুসলিম দেশসমূহে কোনো মতেই এ সংস্কৃতি লালন ও পালন করা জায়িয নেই।
মুলতঃ কথিত বাবা দিবস-মা দিবস শয়তানের ওয়াসওয়াসা ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ এতে ওহীর মূল্যবোধকে অবমাননা করা হয়। ইসলাম যে পরিপূর্ণ তথা কুরআন-সুন্নাহ্র বাণীই যে অনেক বেশি জীবন্ত ও ফলপ্রদ তা অস্বীকার করা হয়।
তথাকথিত মা দিবসের প্রচারণা মূলত এটাই প্রমাণ করে যে, আসলে মা দিবস পালনকারী কাফির-মুশরিকরা মাতৃভক্তি ও ভালোবাসার চেতনায় উজ্জীবিত নয়। তারা মাতৃ ভালোবাসার বন্ধনহীনতায় ভুগছে। অশান্তিতে ভুগছে। যন্ত্রণায় দগ্ধ হচ্ছে। তার থেকে উত্তরণ লাভের জন্য তারা তথাকথিত মা দিবসে ক্ষণিকের জন্য মাতৃভক্তির চেতনায় উজ্জীবিত হবে। অথচ ইসলাম প্রতিটি দিনে প্রতিটি মুহূর্তেই মায়ের প্রতি অগাধ মুহব্বতের প্রেরণা ও শক্ত নির্দেশ দেয়।
অথচ, হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশ্ত বা পিতার সন্তুষ্টিতে খোদার সন্তুষ্টি।”
আর কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাকেছাড়া অন্য কারো ইবাদত করো না এবং পিতামাতার সাথে সদ্ব্যবহার কর। তাদের মধ্যেকেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে ‘উহ্’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্টাচারপূর্ণ কথা।তাদের সামনে ভালবাসার সাথে দয়ার হাত বিছিয়ে দাও এবং বল; হে আমারপালনকর্তা! তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর। যেমন তারা আমাকে শৈশব কালেলালন-পালন করেছেন।” (সূরা বণী ইসরাঈল/২৩-২৪)
“আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের জোর নির্দেশ দিয়েছি। তারমাতা-তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে রেহেম শরীফ-এ ধারণ করেছে। তার দুধ ছাড়ানোদু’বছরে হয়। নির্দেশ দিয়েছি যে, আমার প্রতি ও তোমার পিতা-মাতার প্রতি কৃতজ্ঞহও।” (সূরা লোকমান/১৪)
এই আয়াত শরীফদ্বয় মুসলিম সন্তানের হৃদয়ে বাবা-মার প্রতি যে অভূতপূর্ব ভালবাসা,মুহব্বত, খিদমত ও আদব-লেহাজের অনুভূতি তৈরি করে; ক্বিয়ামত পর্যন্ত অপর কোনবাণী, চেতনা বা মূল্যবোধ তার ধারকাছের অনুভূতিও তৈরী করতে পারবে না।
কারণ, এ হচ্ছে ওহী। এ ওহীর তাছির বেমেছাল হৃদয়গ্রাহী। যে কারণে এখনও বিশ্বেরমুসলমানগণ বাবা-মা কেন্দ্রিক পারিবারিক বন্ধনে আবদ্ধ। আর এ বন্ধনই পশ্চিমাসভ্যতার বল্গাহীন জীবন থেকে মুসলমানদের রক্ষা করছে।
কাজেই পশ্চিমা তথা ইহুদী-খ্রিস্টানদের নজর এই রক্ষা কবচ তথা মুসলমানদেরপারিবারিক বন্ধন ও মূল্যবোধ বিনষ্টকরণের দিকে। সেক্ষেত্রে বাবা-মার প্রতি ইসলামীচেতনা অবলুপ্ত করে বছরে একদিন একটি কার্ড আর কিছু ফল পাঠিয়ে বাবা-মা দিবসসংস্কৃতি প্রচলনের মাধ্যমেই ওরা অনেকাংশে সফল হবে বলে মনে করছে। কাজেইসচেতন মুসলমানকে এখনই এ বিষয়ে সঠিক ভূমিকা নিতে হবে।
মূলকথা হলো- শরীয়তের দৃষ্টিতে খাছ করে ‘মা দিবস’ আর আম বা সাধারণভাবে সমস্ত দিবস যেগুলি বিধর্মীদের দ্বারা প্রবর্তিত তা পালন করা সম্পূর্ণ হারাম ও কাট্টা কুফরী। কারণ তথাকথিত ‘মা দিবস’ ইসলামী কোনো আদর্শ নয়; বরং সম্পূর্ণরূপে বেদ্বীনী ও বিজাতীয় আদর্শ। ইহুদী-খ্রিস্টানরা তথাকথিত ‘মা দিবস’-এর মাধ্যমে মুসলমানদেরকে কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ থেকে গাফিল করার গভীর ষড়যন্ত্র করছে। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের থেকে সরিয়ে বা গাফিল করে দিয়ে কাফির মুশরিকদের দিকে রুজু করতে চায়। যা থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরয-ওয়াজিব।
মহান আল্লাহ পাকরহমত ও গায়েবী মদদের মালিক।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন