728x90 AdSpace

  • Latest News

    যারা বলে ‘হজ্জের সাথে পবিত্র রওযা শরীফ যিয়ারতের কোনো সম্পর্ক নেই’ তারা গুমরাহ ও বাতিল ফিরক্বার অন্তর্ভুক্ত।

    খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, ‘তোমরা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত করো, উনাকে সম্মান করো এবং সকাল-সন্ধ্যা উনার ছানা-সিফত করো।’সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি হজ্জ করলো অথচ আমার রওযা শরীফ যিয়ারত করলো না, সে আমার সাথে বেয়াদবী করলো।’
    যারা হজ্জ করতে যাবে তাদের অবশ্যই প্রথমেই পবিত্র রওযা শরীফ যিয়ারত করতে হবে।
    পবিত্র রওযা শরীফ যিয়ারত করা ঈমান হিফাযত ও হজ্জ কবুল হওয়ার কারণ।
    যারা বলে ‘হজ্জের সাথে পবিত্র রওযা শরীফ যিয়ারতের কোনো সম্পর্ক নেই’ তারা গুমরাহ ও বাতিল ফিরক্বার অন্তর্ভুক্ত।
    বর্তমানে যে দলটি মুসলমানের ঈমান আমলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে সে দলটি হচ্ছে- ওহাবী ফিরক্বা। এই ওহাবীরা মুসলমানদের হজ্জ ও ঈমানকে নষ্ট করার লক্ষ্যে নানা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। এর মধ্যে একটি ষড়যন্ত্র হচ্ছে হজ্জের সময় তারা প্রচার করে থাকে যে, ‘হজ্জের সাথে রওযা শরীফ যিয়ারতের কোনো সম্পর্ক নেই। অর্থাৎ পবিত্র রওযা শরীফ যিয়ারতের কোনো প্রয়োজন নেই।’ নাঊযুবিল্লাহ! অথচ রওযা শরীফ যিয়ারত করা হজ্জ কবুল হওয়ার শর্ত এবং হজ্জ করে পবিত্র রওযা শরীফ যিয়ারত না করে ফিরে আসা ঈমানহারা হওয়ার কারণ। তাই অসংখ্য হাদীছ শরীফ-এ পবিত্র রওযা শরীফ যিয়ারত করার জন্য তাগিদ ও উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে।

    এ প্রসঙ্গে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি আমার রওযা শরীফ যিয়ারত করবে, তার জন্যে আমার সুপারিশ ওয়াজিব।” সুবহানাল্লাহ!
    অন্য হাদীছ শরীফ-এ উল্লেখ আছে, “যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় আমার রওযা শরীফ যিয়ারত করবে, সে ক্বিয়ামতের দিন আমার পড়শি হবে। আর যে ব্যক্তি মক্কা শরীফ অথবা মদীনা শরীফ উনাদের হেরেম শরীফ-এ মৃত্যুবরণ করবে, সে ক্বিয়ামতের দিন নিরাপত্তা লাভ করবে।” সুবহানাল্লাহ!
    রওযা শরীফ যিয়ারতের ফযীলত সম্পর্কে হাদীছ শরীফ-এ আরো ইরশাদ হয়েছে, “যে ব্যক্তি হজ্জ করার পর আমার রওযা শরীফ যিয়ারত করার উদ্দেশ্যে মসজিদে নববী শরীফ-এ আসবে, তার জন্যে দুটি মকবুল হজ্জ লেখা হবে।” সুবহানাল্লাহ!

    অন্যত্র আরো ইরশাদ হয়েছে, “যে ব্যক্তি আমার বিছাল শরীফ-এর পর আমার রওযা শরীফ যিয়ারত করলো, সে যেন দুনিয়াতেই আমার যিয়ারত বা সাক্ষাৎ লাভ করলো। আর যে ব্যক্তি আমার রওযা শরীফ যিয়ারত করবে, তার জন্যে ক্বিয়ামতের দিন শাফায়াত করা আমার উপর ওয়াজিব হবে। আমার যে উম্মত সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও আমার রওযা শরীফ যিয়ারত করবেনা, তার কোনো ওজরই গ্রহণযোগ্য হবেনা।”
    উল্লিখিত হাদীছ শরীফসমূহ সুলত্বানুল মুহাদ্দিছীন, তাজুল মুফাসসিরীন, যুবদাতুল আরিফীন, আশেকু রসূলিল্লাহ, শাইখুল উলামা ওয়াল মাশায়িখ হযরত মাওলানা শাহ ছূফী আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিশ্ববিখ্যাত কিতাব “জযবুল কুলূব ইলা দিয়ারিল মাহবুব”-এর যিয়ারত অধ্যায়ে উল্লেখ করেন এবং বলেন, “উক্ত হাদীছ শরীফসমূহের কোনোটি ছহীহ ও কোনোটি হাসান পর্যায়ের।”
    শুধু তাই নয়, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র রওযা শরীফ যিয়ারত না করা পর্যন্ত কোনো হাজী ছাহেবের হজ্জই পূর্ণ হবে না, অর্থাৎ হজ্জ অপূর্ণ থেকে যাবে। যেমন এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “রওযা শরীফ যিয়ারত করা হজ্জকে পূর্ণতাদানের কারণ।”
    যদিও হাজী ছাহেবদের জন্যে পবিত্র রওযা শরীফ যিয়ারত করা আম ফতওয়া মুতাবিক ফরয করা হয়নি; তবে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ বা ক্বরীবাতুম মিনাল ওয়াজিব অর্থাৎ ওয়াজিবের নিকটবর্তী করা হয়েছে। আর খাছ ফতওয়া হলো- পবিত্র রওযা শরীফ যিয়ারত করা ফরযের অন্তর্ভুক্ত। কারণ হজ্জ করে পবিত্র রওযা শরীফ যিয়ারত না করে চলে আসা হচ্ছে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে চরম ধৃষ্টতা প্রদর্শন করা। যা অবশ্যই বেঈমান হওয়ার কারণ। এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ উল্লেখ করা হয়, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি হজ্জ করলো অথচ আমার রওযা শরীফ যিয়ারত করলো না, সে অবশ্যই আমার সাথে বেয়াদবী করলো।” আর এ ব্যাপারে সকলেই একমত যে, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে বেয়াদবী করা নিশ্চিত কুফরী, যার থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মুসলমান পুরুষ ও মহিলার জন্যে ফরয। আর তাই বিখ্যাত সূফী সাধক, আলিমকুল শিরোমণি, আল্লামা হযরত জালালুদ্দীন রুমি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত হতে বেয়াদব সম্পূর্ণই বঞ্চিত।”
    ওহাবীরা একখানা হাদীছ শরীফ-এর সঠিক ব্যাখ্যা অনুধাবনে ব্যর্থ হয়ে বলে থাকে যে পবিত্র রওযা শরীফ, মাযার শরীফ যিয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর করা বিদয়াত। নাঊযুবিল্লাহ! যেমন হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “তোমরা তিন মসজিদ অর্থাৎ বাইতুল্লাহ শরীফ, মসজিদে নববী শরীফ ও বাইতুল মুক্বাদ্দাস শরীফ ব্যতীত অন্য কোনো (মসজিদের) উদ্দেশ্যে সফর করো না।”
    মূলত উক্ত হাদীছ শরীফ দ্বারা কখনই পবিত্র রওযা শরীফ, মাযার শরীফ যিয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর করা নিষেধ প্রমাণিত হয় না। কারণ উক্ত হাদীছ শরীফখানা পবিত্র রওযা শরীফ, মাযার শরীফ সম্পর্কিত নয়; বরং মসজিদ সম্পর্কিত। অর্থাৎ উক্ত তিন মসজিদ ব্যতীত সকল মসজিদে যেহেতু সমান ফযীলত তাই উক্ত তিন মসজিদ ব্যতীত অন্য কোনো মসজিদের উদ্দেশ্যে (বেশি ফযীলত পাওয়ার আশায়) সফর করা নিষিদ্ধ। পবিত্র রওযা শরীফ, মাযার শরীফ যিয়ারত করার উদ্দেশ্যে সফর করার সাথে উক্ত হাদীছ শরীফ-এর কোনোই সম্পর্ক নেই। যদি থাকতো তবে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কখনোই বদর ও উহুদের শহীদান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মাযার শরীফ যিয়ারতের উদ্দেশ্যে প্রতি বৎসর সফর করতেন না।
    তাই উক্ত হাদীছ শরীফ-এর ব্যাখ্যায় নির্ভরযোগ্য সকল ব্যাখ্যা গ্রন্থে উপরোক্ত ব্যাখ্যাই উল্লেখ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, নির্ভরযোগ্য সকল ফিক্বাহর কিতাবসমূহেও আমভাবে মাযার শরীফ যিয়ারত করার উদ্দেশ্যে সফর করাকে জায়িয ও সুন্নত বলে ফতওয়া দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আমাদের মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ-এর ৪র্থ সংখ্যায়ও অর্ধ শতাধিক নির্ভরযোগ্য দলীলের ভিত্তিতে ফতওয়া প্রদান করা হয়েছে।
    অতএব, কোনো ব্যক্তি রওযা শরীফ যিয়ারত করতে চাইলে সম্পূর্ণ হালাল পন্থায় সুন্নতী নিয়মে আদবের সাথে যিয়ারত করতে হবে। মূলকথা হচ্ছে- যারা হজ্জ করতে যাবে তাদের অবশ্যই প্রথমেই পবিত্র রওযা শরীফ যিয়ারত করতে হবে। পবিত্র রওযা শরীফ যিয়ারত করা ঈমান হিফাযত ও হজ্জ কবুল হওয়ার কারণ। যারা বলে ‘হজ্জের সাথে পবিত্র রওযা শরীফ যিয়ারতের কোনো সম্পর্ক নেই’ তারা গুমরাহ ও বাতিল ফিরক্বার অন্তর্ভুক্ত।
    • Blogger Comments
    • Facebook Comments

    0 মন্তব্য(গুলি):

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    Item Reviewed: যারা বলে ‘হজ্জের সাথে পবিত্র রওযা শরীফ যিয়ারতের কোনো সম্পর্ক নেই’ তারা গুমরাহ ও বাতিল ফিরক্বার অন্তর্ভুক্ত। Rating: 5 Reviewed By: Baitul Hikmah
    Scroll to Top