মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘আমি অনেক জ্বিন ও ইনসানের জন্য জাহান্নাম তৈরি করেছি। তাদের অন্তর থাকার পরও বুঝবে না, চক্ষু থাকার পরও দেখবে না, কান থাকার পরও শুনবে না। এরা হচ্ছে পশুর মতো বরং তার চেয়েও অধম বা গুমরাহ। এরা হচ্ছে চরম গাফিল।’ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘আমার উম্মতের মধ্যে যারা উলামায়ে ‘সূ’ তাদের জন্য জাহান্নাম।’ উলামায়ে ‘সূ’দের জন্য তো জাহান্নাম অবধারিত আছেই; পাশাপাশি যারা এদেরকে অনুসরণ, অনুকরণ ও সমর্থন করবে তারাও জাহান্নামী হবে। তাই উলামায়ে ‘সূ’দের থেকে দূরে থাকা ও এদেরকে দূরে রাখার সাথে সাথে এদেরকে অনুসরণ, অনুকরণ করা থেকে বিরত থাকা সকলের জন্যই ফরয। যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, মুর্শিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘আমি অনেক জ্বিন ও ইনসানের জন্য জাহান্নাম তৈরি করেছি। তাদের অন্তর থাকার পরও বুঝবে না, চক্ষু থাকার পরও দেখবে না, কান থাকার পরও শুনবে না। এরা হচ্ছে পশুর মতো বরং তার চেয়েও অধম বা গুমরাহ। এরা হচ্ছে চরম গাফিল।’ এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার লক্ষ-কোটি ব্যাখ্যা মুবারক রয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো- এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে উলামায়ে ‘সূ’দের সম্পর্কে বলা হয়েছে। যারা অন্তর থাকার পরও বুঝে না, চক্ষু থাকার পরও দেখে না, কান থাকার পরও শুনে না। এরা হচ্ছে পশুর মতো বরং তার চেয়েও অধম বা গুমরাহ। এরা হচ্ছে চরম গাফিল। এদের প্রসঙ্গেই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ হয়েছে, “হযরত যিয়াদ বিন হুদাইর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, আমাকে আমিরুল মু’মিনীন হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, ‘আপনি কি জানেন, কোন্ জিনিস সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে ক্ষতি করে?’ আমি বললাম- ‘না, আমি জানিনা।’ তখন তিনি বললেন, ‘সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে ক্ষতি করে আলিমের পদস্খলন অর্থাৎ উলামায়ে ‘সূ’ বা ধর্মব্যবসায়ী আলিম বা মালানারা, মুনাফিকদের কিতাব সম্পর্কে তর্ক-বিতর্ক এবং গুমরাহ শাসকদের গুমরাহীমূলক আদেশ-নির্দেশ।” মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, উলামায়ে ‘সূ’দের পরিচিতি ও পরিনতি সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “একদা আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘তোমরা জুব্বুল হুযূন হতে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট পানাহ চাও।’ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনারা জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! জুব্বুল হুযূন কি?’ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, ‘জাহান্নামের একটি উপত্যকা যা হতে (জাহান্নামবাসী তো অবশ্যই) স্বয়ং জাহান্নামও দৈনিক চার শতবার পানাহ চেয়ে থাকে।’ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনারা পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এতে কারা প্রবেশ করবে?’ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, ‘ঐ সকল রিয়াকার হাফিয, ক্বারী, মালানা। অর্থাৎ উলামায়ে ‘সূ’। যারা মানুষকে দেখানোর জন্য আমল করতো এবং দুনিয়া হাছিলের জন্য দ্বীনকে বিক্রি করে দিতো বা শরীয়ত বিরোধী কাজে মশগুল হতো।” আর ‘ইবনে মাজাহ শরীফ’ কিতাব উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, ‘হাফিয, ক্বারী, মালানাদের মধ্যে তারাই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট; অর্থাৎ তারাই উলামায়ে ‘সূ’ যারা দুনিয়াবী ফায়দা লাভের উদ্দেশ্যে আমীর, উমরাহ, রাজা, বাদশাহদের সাথে সাক্ষাত বা উঠাবসা করে।” মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার উম্মতের মধ্যে যারা উলামায়ে ‘সূ’ তাদের জন্য জাহান্নাম। কারণ তারা ইল্মকে ব্যবসা হিসেবে গ্রহণ করতঃ তাদের যুগের শাসকদের নিকট থেকে অর্থ ও পদ লাভের প্রচেষ্টা চালাবে। মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এ সকল উলামায়ে ‘সূ’দের বিরুদ্ধে এই বলে দোয়া করেন যে, “আয় মহান আল্লাহ পাক! যারা নিজেদের ইল্ম দ্বারা দুনিয়াবী রাজা-বাদশাহ তথা সরকারের সাথে ব্যবসা করতে চায় তাদের ব্যবসায় বরকত দিবেন না।” মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মূলকথা হলো- উলামায়ে ‘সূ’দের জন্য তো জাহান্নাম অবধারিত আছেই; পাশাপাশি যারা এদেরকে অনুসরণ, অনুকরণ ও সমর্থন করবে তারাও জাহান্নামী হবে। তাই উলামায়ে ‘সূ’দের থেকে দূরে থাকা ও এদেরকে দূরে রাখার সাথে সাথে এদেরকে অনুসরণ, অনুকরণ করা থেকে বিরত থাকা সকলের জন্যই ফরয ।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন