728x90 AdSpace

  • Latest News

    তাহাজ্জুদ উনার নামায জামায়াতের সাথে আদায় করা সম্পূর্ণ মাকরুহ তাহরীমী ও বিদায়াতে সাইয়্যিয়াহ

    আজকাল কোন কোন স্থানে তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়তে দেখা যায়। বিশেষ করে রমাদ্বান শরীফ মাসে বেশীদেখা যায়। অথচ আমাদের হানাফী মাযহাবের ফতওয়া অনুযায়ী তাহাজ্জুদ নামায ইমামের সাথে চারজন মুক্তাদীসহজামায়াতে আদায় করা মাকরূহ তাহরীমী  বিদায়াতে সাইয়্যিয়াহ। চাই রমাদ্বান শরীফ মাসে হোক অথবা গায়রেরমাদ্বান শরীফ মাসে হোকএর উপর মুসলমানদের ইজমা (ঐক্যমতপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

    যেমন কিতাবে উল্লেখ করা হয়রমাদ্বান শরীফ মাস ব্যতীত বিতর নামায  নফল নামায জামায়াতে পড়ো নাকেননা ঘোষণা দিয়ে নফল নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ তাহরীমী এবং এটার উপর মুসলমানদের ইজমাপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে(আলজাওহারাতুন নাইয়্যারাহ ,পৃষ্ঠা-১২৮)

    কেউ কেউ বলে থাকে উপরোক্ত ইবারতে এবং আরো অনেক ইবারতে রমাদ্বান শরীফ মাস ছাড়া নফল নামাযজামায়াতে পড়তে নিষেধ করা হয়েছে। কাজেই কেউ যদি তাহাজ্জুদ নামায রমাদ্বান শরীফ মাসে জামায়াতে পড়ে,তবে মাকরূহ হবে কেন?


    এর জবাব হলোযারা  কথা  বলে থাকেতারা উপরোক্ত কিতাবের ইবারতের ব্যাখ্যা বুঝতে সক্ষম হননি। কারণরমাদ্বান শরীফ মাসে যে নফল নামায জামায়াতে পড়া জায়িয বলা হয়েছেতা হলো তারাবীহ নামায।

     প্রসঙ্গে কিতাবে উল্লেখ করা হয়যে সকল ইবারতে রমাদ্বান শরীফ মাসেনফল নামায মাকরূহ নয় বলে উল্লেখআছেউক্ত নফল নামাযের দ্বারা তারাবীহ নামাযকেই বুঝানো হয়েছে (আহসানুল ফতওয়া৩য়জিলদপৃষ্ঠা-৪৭৪)

    উক্ত কিতাবে আরো উল্লেখ করা হয় কারণেই হযরত সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালাআনহুমতাবেয়ীনইমামমুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা রমাদ্বান শরীফ মাসে তারাবীহ নামায ব্যতীতঅন্য কোন নফল নামায জামায়াতে আদায় করেননি। বরং রমাদ্বান শরীফ মাসে তারাবীহ ব্যতীত অন্যান্য নফলনামায নাজায়িয হওয়ার উপরই সকলেই একমত

    এখন কেউ প্রশ্ন করতে পারেনতারাবীহ নামায তো নফল নয় এখানে লক্ষ্যনীয় বিষয় এই যেসকল নামাযইহাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য দুভাগে বিভক্ত ছিল। (ফরয নামায (নফলনামায। হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য কোন ওয়াজিবসুন্নতে মুয়াক্কাদা,সুন্নতেযায়িদা,মুস্তাহাব নামায ছিল না। ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ইজতিহাদ করে হাবীবুল্লাহ হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নফল নামাযগুলো তাক্বীদ অনুযায়ী আমাদের জন্য কোনটা ওয়াজিবযেমনঃ বিতর  দুই ঈদের নামাযকোনটা সুন্নতে মুয়াক্কাদা যেমনঃ তারাবীহফযরের পূর্বেরযোহরের পূর্বের পরেরমাগরিবের  ইশার পরের সুন্নত নামাযসমূহ। কোনটা সুন্নতে যায়িদা যেমনঃ আছরের পূর্বের এবং ইশারপূর্বের চার রাকায়াত সুন্নত নামায। কোনটা মুস্তাহাব যেমনঃ আওয়াবীনচাশতশবে বরাতশবে ক্বদর ইত্যাদিভাগে ভাগ করেছেন। তাই একমাত্র ফরয নামায ব্যতীত সকল নামাযগুলোই মূলতঃ নফল নামাযের অন্তর্ভূক্ত। কিন্তুআহকামের দিক দিয়ে কোনট ওয়াজিবমুয়াক্কাদাযায়িদামুস্তাহাবের অন্তর্ভূক্ত।

    স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীনইমামুল মুরসালীনহাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তারাবীহনামাযকে নফল বলে উল্লেখ করেছেন। যেমন হাদীছ শরীফ- ইরশাদ হয়েছে,  তোমাদের জন্য মহান আল্লাহপাকতিনি রমাদ্বান শরীফ-এর রোযাকে ফরয করেছেন এবং ক্বিয়ামুল লাইলকে (অর্থাৎ তারাবীহ নামাযকেনফল(সুন্নতে মুয়াক্কাদাকরেছেন।” (বায়হাক্বী শরীফ)

    উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা এটা স্পষ্টই প্রমাণিত হলো যেরমাদ্বান শরীফ মাসে যে নফল নামায জামায়াতে পড়ারআদেশ রয়েছেতা হলো তারাবীহ নামায। সাথে সাথে এটাও প্রমাণিত যেক্বিয়ামুল লাইল অর্থ তারাবীহ নামায।যারা ক্বিয়ামুল লাইলকে তাহাজ্জুদ নামায বলে থাকেনতাদের কথা শুদ্ধ নয়। কেননা কিতাবে উল্লেখ রয়েছেহযরতমুহাদ্দিছীনদের অধিকাংশই “ক্বিয়ামুল লাইল” দ্বারা তারাবীহকে বুঝিয়েছেন (হেদায়াফতহুল ক্বাদিরমাবছূত,বাদায়েআহসানুল ফতওয়া)

    সুতরাং রমাদ্বান শরীফ মাসে যে নফল নামায জামায়াতে পড়া জায়িয বলা হয়তাহলো তারাবীহ নামায। সুতরাংআমাদের হানাফী মাযহাবের ফতওয়া হলো রমাদ্বান শরীফ মাসে তারাবীহ নামায জামায়াতে পড়া সুন্নতেমুয়াক্বায়ায়ে ক্বিফায়াবিতর নামায রমাদ্বান শরীফ মাসে জামায়াতে পড়া মুস্তাহাবরমাদ্বান শরীফ-এর বাইরেজামায়াতে পড়া মাকরূহ তানযীহী এবং সালাতুল কুসূফ (সূর্য গ্রহণসালাতুল ইস্তেস্কা (বৃষ্টিরনামায রমাদ্বান শরীফমাসে হোক অথবা গায়রে রমাদ্বান শরীফ- হোক জামায়াতে আদায় করা সুন্নতে যায়িদা।

    উল্লেখিত নফল নামাযগুলো জামায়াতে আদায় জায়িয  শরীয়ত সম্মত বরং সুন্নতের অন্তর্ভূক্ত। সুতরাং তাহাজ্জুদনামাযচাশতআওয়াবীনশবে ক্বদর  শবে বরাত ইত্যাদি সকল নফল নামাযসমূহ জামায়াতে আদায় করামাকরূহ তাহরীমী  বিদায়াতে সাইয়্যিয়াহ। কেননা সাইয়্যিদুল মুরসালীনইমামুল মুরসালীন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাকছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামহযরত সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমতাবেয়ীনতাবে তাবেয়ীন,ইমাম মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের কেউ তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়ছেন বলে কোন প্রমাণ কেউপেশ করতে পারবে না।  প্রসঙ্গে কিতাবে উল্লেখ করা হয়হযরত শায়খুল কাসেম হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহিতিনি বলেননফল নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ তাহরীমী। কেননা যদি নফল নামায জামায়াতে পড়া মুস্তাহাব ফযীলতের কারণ হতোতবে অবশ্যই যারা রাত্রে উঠে তাহাজ্জুদ নামায পড়ে থাকেতারা ফযীলত অর্জনের লক্ষ্যেএকত্রিত হয়ে জামায়াতে আদায় করতেন। অথচ হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  হযরতসাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়েছেন বলে দেখা যায়না (মাবছূত সারাখসীমাছাবাতা বিছসুন্নাহ)

    সুতরাং তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে আদায় করা মাকরূহ তাহরীমী  বিদায়াতে সাইয়্যিয়াহ।

    অনেকে মনে করেন যেরমাদ্বান শরীফ মাসে তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতের সাথে আদায় করে অনেক ফযীলত হাছিলকরা যাবেমূলতঃ তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতের সাথে আদায় করলে ফযীলত তো পাওয়া যাবেই না বরং সেগুনাহগার হবে। কেননা মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিযেভাবে ইবাদত করার জন্য বলেছেনতার বিপরীত করে কিভাবে ফযীলতের আশা করা যায়যেমন কেউ যদিমুসাফির অবস্থায় কছর নামায দুরাকায়াতের পরিবর্তে বেশী ফযীলত পাওয়ার জন্য চার রাকায়াত আদায় করে,তবে সে কি ফযীলত অর্জন করতে পারবেকখনো নয় বরং তার কবীরা গুণাহ হবে এবং তার উক্ত নামাযদোহরানো ওয়াজিব হবে। কেননা সে মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামউনার হুকুমের খিলাফ কাজ করলো। তেমনিভাবে তাজাজ্জুদ তথা নফল নামায যেখানে হানাফী মাযহাব মুতাবিকঘোষণা দিয়ে জামায়াতে আদায় করা মাকরূহ তাহরীমী  বিদায়াতে সাইয়্যিয়াহ সেখানে এরূপ একটি বিদায়াত কাজকরে আমরা কি করে ফযীলতের আশা করতে পারিঅথচ এরূপ বিদায়াত সম্পর্কেই হাদীছ শরীফ- হাবীবুল্লাহহুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেনপ্রত্যেক বিদায়াতই গুমরাহী এবংপ্রত্যেক গুমরাই জাহান্নামী(মিশকাত শরীফ)

    এখন কেউ কেউ বলতে পারেনঅতীতে বা বর্তমানে অনেক পীর ছাহেবমুফতী ছাহেবমুফাচ্ছির ছাহেবমুহাদ্দিছছাহেবমাওলানা ছাহেবহাফিয ছাহেবক্বারী ছাহেবওয়ায়েজইসলামী চিন্তাবিদইসলামী রাজনৈতিক নেতা,আলেমজালেমসূফীদরবেশ প্রমূখ ব্যক্তিবর্গ তাহাজ্জুদের নামায জামায়াতে পড়েছেন বা পড়তে বলেছেনপড়েন বাপড়তে বলেনতাদের সম্পর্কে ফায়সালা কিমূলতঃ এর জবাবে সংক্ষেপে এতটুকু বললেই চলে যেইসলামী শরীয়তকোন ব্যক্তিসমাজরাষ্ট্র বা অধিকাংশ লোককে দলীল বা আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে নাযতক্ষণ পর্যন্তনা সে ব্যক্তি,সমাজরাষ্ট্র বা অধিকাংশ লোক কুরআন শরীফহাদীছ শরীফইজমা  ক্বিয়াসের উপর কায়েম না থাকবে। অর্থাৎযে কেউ ইসলামের খিদমত করলেই যে সে ইসলামের আদর্শ বা দলীল বলে গণ্য হবেতা নয়। যেখানে তাহাজ্জুদনামায জামায়াতে পড়া অসংখ্যঅকাট্য  নির্ভরযোগ্য দলীল-আদীল্লার ভিত্তিতে মাকরূহ তাহরীমী  বিদায়াতেসাইয়্যিয়াহ প্রমাণিত। সেখানে বিনা দলীলে এটাকে জায়িয বলা গুমরাহী ছাড়া কিছুই নয়। সুতরাং মোটকথা হলোহানাফী মাযহাবের ফতওয়া মুতাবিক তারাবীহএস্তেস্কাকুসূফ এর নামায জামায়াতে পড়া জায়িয। আর তাহাজ্জুদ অন্যান্য নফল নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ তাহরীমী  বিদায়াতে সাইয়্যিয়াহযদি ইমাম ব্যতীত চারজনমুক্তাদী হয়ঘোষণা দিয়ে পড়ুক আর বিনা ঘোষণায় পড়ুক।

    যে সকল কিতাবে নফল নামায  তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ তাহরীমী  বিদায়াতে সাইয়্যিয়াহ বলেউল্লেখ রয়েছেনিম্নে ফতওয়া  ফিক্বাহের কিতাবসমূহ হতে তার নির্ভরযোগ্য  অকাট্য দলীল-আদীল্লা পেশ করাহলোঃ

    . রমাদ্বান শরীফ মাস ব্যতীত বিতর নামায  নফল নামায জামায়াতে পড়ামাকরূহ তাহরীমীযদি ইমাম ব্যতীতচারজন মুক্তাদী ইক্তেদা করে এবং ঘোষণা দিয়ে করা হয়। আর যদি একজন অথবা দুইজন ইক্তেদা করে তবে কেউকেউ বলেন মাকরূহকেউ কেউ বলেন মাকরূহ নয়। (অবশ্য চারজন মুক্তাদী হলে সর্বসম্মতিক্রমেই মাকরূহতাহরীমী) (রদ্দুল মুহতার১ম জিলদপৃষ্ঠা-৬৬৩,দুররুল মুখতারশামী১মজিলদপৃষ্ঠা-৭৪১গায়াতুল আওতার ১ম জিলদপৃষ্ঠা-২৫৭আল কুহেস্তানী)

    [কেউ কেউ বলতে পারেন যেএখানে রমাদ্বান শরীফ মাসে নফল নামায জামায়াতে পড়তে নিষেধ করা হয়নি?এখানে উল্লেখ্য যেআমরা পূর্বেই অত্র ফতওয়ার ভূমিকায় দলীল সহকারে প্রমাণ করেছি যেযে সকল কিতাবসমূহেরমাদ্বান শরীফ মাসে নফল নামায জামায়াতে পড়ার অনুমতি দেয়া হয়েছেতা হলো তারাবীহ নামায। সুতরাংতাদের মূল বক্তব্য হলোতারাবীহ নামায ব্যতীত রমাদ্বান শরীফ মাসেও কোন নফল নামায জামায়াতে পড়ামাকরূহ তাহরীমী।

    মোটকথা আমাদের হানাফী মাযহাবের ফতওয়া হলো তারাবীহ নামায রমাদ্বান শরীফ মাসে জামায়াতে পড়া সুন্নতেমুয়াক্কাদা কিফায়া এবং বিতর রমাদ্বান শরীফ মাসে জামায়াতে পড়া মুস্তাহাবগায়রে রমাদ্বান শরীফ- জামায়াতেপড়া মাকরূহ তানযীহী এবং এস্তেস্কা  কুসূফের (সূর্য গ্রহণনামায রমাদ্বান শরীফ মাসে  বা গায়রে রমাদ্বান শরীফ- সব সময় জামায়াতের সাথে পড়া সুন্নতে যায়িদার অন্তর্ভূক্ত। এটা ব্যতীত সকল নফল নামায যেমনঃ তাহাজ্জুদেরনামাযশবে ক্বদরশবে বরাতখূসুফ (চন্দ্র গ্রহণইত্যাদি। ঘোষণা দিয়ে ইমাম ব্যতীত চারজন মুসল্লীসহ জামায়াতেআদায় করা মাকরূহ তাহরীমী  বিদায়াতে সাইয়্যিয়াহ। চাই রমাদ্বান শরীফ মাসে হোক অথবা রমাদ্বান শরীফ মাসব্যতীত অন্য কোন মাসে হোক। এর উপর হানাফী মাযহাবের সকল ইমামমুজতাহিদগণ একমত।]

    . নিশ্চয়ই ঘোষণা দিয়ে নফল নামায জামায়াতের সাথে পড়া মাকরূহ তাহরীমী।
    সদরুশ শহীদ উনার কিতাবুল আসলে উল্লেখ করেন যেযদি আযান  ইক্বামত ব্যতীত মসজিদের কোন এককোণায় নফল নামায জামায়াতে আদায় করেতবে মাকরূহ হবে না। এর ব্যখ্যায় হযরত শামসুল আইম্মা(হালওয়ালী)  রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি  বলেনযদি ইমাম ব্যতীত তিনজন মুক্তাদী হয়তবে সকলের মতে মাকরূহহবে না। আর চারজনের বেলায় মাশায়িখদের মধ্যে ইখতিলাফ রয়েছে। তবে অধিক সহীহ মত হলো ইমাম ব্যতীতচারজন মুক্তাদী হলে মাকরূহ তাহরীমী হবে। (ফতওয়ায়ে আলমগীরী ১ম জিলদপৃষ্ঠা-৮৩খোলাসাতুলফতওয়া ১ম জিলদপৃষ্ঠা-১৫৪বাহরুর রায়েক ১ম জিলদপৃষ্ঠা-৩৪৫মিনহাতুল খালিক্ব ১ম জিলদ,পৃষ্ঠা-৩৪৫শরহে মুনিয়া)

    . কিতাবুল আসলে উল্লেখ রয়েছেতারাবীহকুসূফ (সূর্য গ্রহণ)এর নামায ব্যতীত নফল নামায জামায়াতেপড়োনা। (মাবসুত লিস সারাখসী ২য় জিলদপৃষ্ঠা-৩৭কিতাবুল আসল ১ম জিলদপৃষ্ঠা-৩৭১)

    . রমাদ্বান শরীফ মাস ব্যতীত (অর্থাৎ তারাবীহ নামায ব্যতীতনফল নামায জামায়াতের সাথে পড়োনাহযরতশামসূল আইম্মা সারাখসী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেননিশ্চয়ইই নফল নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহতাহরীমীযখন ঘোষণা দিয়ে পড়া হবে। সুতরাং যদি ইমামের সাথে একজন অথবা দুজন ইক্তেদা করেতবে মাকরূহহবেনাতিনজন ইক্তেদা করার মধ্যে মতবিরোধ রয়েছেতবে চারজন ইক্তেদা করলে সর্বসম্মতিক্রমে মাকরূহতাহরীমী। (ফতওয়ায়ে তাতারখানিয়া ১ম জিলদপৃষ্ঠা-৬৩৬)

    . তোমরা তারাবীহকুসূফ (সূর্য গ্রহণএর নামায ব্যতীত কোন নফল নামায জামায়াতে পড়োনা। (বাদায়েউচ্ছানায়ে ফি তারতীবিশ শারায়ে ১ম জিলদপৃষ্ঠা-২৮০)

    . তারাবীহকুসূফ (সূর্য গ্রহণএর নামায ব্যতীত অন্যান্য নফল নামায জামায়াতে আদায় করা কি মাকরূহতাহরীমীমোসান্নেফ বলেনহ্যাঁ। (অর্থাৎ মাকরূহ তাহরীমী) (কিতাবুল আসল মারুফ বিল মাবসূত ১মজিলদপৃষ্ঠা-৪৪৩ফতহুল ক্বাদীর ১ম জিলদপৃষ্ঠা-৪৩৯)

    . তারাবীহ ব্যতীত নফল নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ তাহরীমী। রমাদ্বান শরীফ মাস ব্যতীত বিতর নামাযজামায়াতে না পড়াই উত্তম।
    হযরত শামসুল আইম্মা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেননিশ্চয়ই নফল নামায ঘোষণা দিয়ে জামায়াতে পড়ামাকরূহ। সুতরাং যদি একজন অথবা দুজন ইমামের সাথে ইক্তেদা করেতবে মাকরূহ হবে না। যখন চারজন ইক্তেদাকরবেতখন সকলের নিকটে মাকরূহ তাহরীমী। (হাশিয়ায়ে তাহতাবী আলা মারাকিউল ফালাহ পৃষ্ঠা-২৫৬)

    . রমাদ্বান শরীফ মাসের বিতর  তারাবীহ ব্যতীত কোন নফল নামায জামায়াতে পড়োনাকেননা ওটা মাকরূহতাহরীমী যদি ঘোষণা দিয়ে পড়া হয়। এটার উপর সকল মুসলমান একমত। (আল জাওহারাতুন নাইয়্যারাপৃষ্ঠা-১২৮)

    . রমাদ্বান শরীফ মাস ব্যতীত (অর্থাৎ তারাবীহ ব্যতীতনফল নামায জামায়াতে পড়োনা। হযরত শামসুল আইম্মাসারাখসী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,নিশ্চয়ই নফল নামায ঘোষণা দিয়ে জামায়াতে পড়া মাকরূহ তাহরীমী।সুতরাং যদি ইমামের সাথে একজন অথবা দুজন ইক্তেদা করেতবে মাকরূহ হবে না। যখন তিনজন ইক্তেদা করবে,তখন মাকরূহ হওয়ার মধ্যে মতভেদ রয়েছে। আর যদি চারজন ইক্তেদা করেতবে সর্বসম্মতিক্রমে মাকরূহ তাহরীমীহবে।(খোলাসাতুল ফতওয়া মায়া মাজমূয়াতুল ফতওয়া ১ম জিলদ,পৃষ্ঠা-১৫৩,আইনী শরহে হেদায়া ২য়জিলদপৃষ্ঠা-৮৩৭শরহে নেক্বায়া লি মোল্লা আলী ক্বারী ১ম জিলদপৃষ্ঠা-২৪২শরহে ইলিয়াস)

    ১০ইমাম হযরত হালাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেনজেনে রাখ ! নিশ্চয়ই নফল নামায ঘোষণা দিয়েজামায়াতে পড়া মাকরূহ তাহরীমীতবে তারাবীহসূর্য গ্রহণ (কুসূফ ইস্তেস্কার (বৃষ্টিরনামায ব্যতীত। সুতরাংসালাতুল রাগায়িব (অর্থাৎ রজব মাসের প্রথম জুময়ার রাত্রের নামায)শবে বরাতের রাত্রের নফল নামায এবং শবেক্বদরের রাত্রের নফল নামায জামায়াতে পড়াও মাকরূহ তাহরীমী  বিদায়াতে সাইয়্যিয়াহ। (আশবাহ ওয়াননাযায়ের ১ম জিলদপৃষ্ঠা-২১৯শরহুল মুনিয়া)

    ১১. কেউ তারাবীহ আদায় করার পর যদি পুনরায় তারাবীহ নামায আদায় করতে চায়তবে জামায়াতে না পড়েএকাকী পড়বেকেননা পুনরায় সে যেই নামায পড়বে সেটা তার জন্য মূলতঃ নফল হবেআর নফল নামাযসাধারণতঃ জামায়াতে পড়া মাকরূহ তাহরীমী। (ফতওয়ায়ে আলমগীরী ১ম জিলদপৃষ্ঠা-১১৬তাতারখানিয়াবাদায়েউচ্ছানায়ে ১ম জিলদপৃষ্ঠা-২৯০বাহরুর রায়েক ২য় জিলদপৃষ্ঠা-৬৮)

    ১২. তারাবীহকুসূফ  ইস্তেস্কার নামায ব্যতীত কোন নফল নামায জামায়াতে পড়োনা। (তাতার খানিয়া ২য়জিলদ, পৃষ্ঠা-৮৫)

    ১৩. ইমাম হযরত তাহতাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেনপাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামায জামায়াতে পড়া সুন্নতেমুয়াক্কাদা। তারাবীহ জামায়াত সুন্নতে মুয়াক্কাদা কিফায়া। আর রমাদ্বান শরীফ মাসে বিতর নামায জামায়াতে পড়ামুস্তাহাব। সুতরাং রমাদ্বান শরীফ মাসের তারাবীহ  বিতর ব্যতীত অন্যান্য নফল নামায ঘোষণা দিয়ে জামায়াতেপড়া মাকরূহ তাহরীমী। (তাহতাবী পৃষ্ঠা-১৫৬কিতাবুল ফিক্বাহ ১ম জিলদপৃষ্ঠা-৩৩৭)

    ১৪. হযরত শায়খ হালাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেননফল নামায ঘোষণা দিয়ে জামায়াতে আদায় করামাকরূহ তাহরীমীতবে তারাবীহ (কুসূফ  ইস্তেস্কাব্যতীত। (আশাবাহ ওয়ান নাযায়ের ১ম জিলদ,পৃষ্ঠা-২১৯)

    ১৫. নিশ্চয়ই নফল নামায ঘোষণা দিয়ে জামায়াতে পড়া মাকরূহ তাহরীমী।(ফতওয়ায়ে বায্যাযিয়া ৪র্থ জিলদ,পৃষ্ঠা-২৯খোলাসাতুল ফতওয়া ১ম জিলদপৃষ্ঠা-৬৩ফতওয়ায়ে হিন্দিয়া ১ম জিলদপৃষ্ঠা-১২৮)

    ১৬. নিশ্চয়ই নফল নামায জামায়াতে পড়া ভিত্তিহীনআর এরূপ ভিত্তিহীন জামায়াত আদায় করা মাকরূহ তাহরীমীহতে খালী নয় (অর্থাৎ মাকরূহ তাহরীমী) সুতরাং নফল নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ তাহরীমী। এটা স্পষ্ট যে,সাইয়্যিদুল মুরসালীনইমামুল মুরসালীন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সুন্নত  নফলনামায এমনকি বিতরও নিজ ঘরে একাকী পড়তেনএটার প্রমাণ সুন্নত  বিতর অধ্যায়ে উল্লিখিত হাদীছ শরীফসমূহে রয়েছে। (এলাউস সুনান ৭ম জিলদপৃষ্ঠা-৭৮)

    ১৭. নফল নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ তাহরীমী। কেননা এটা সুন্নতে মুয়াক্কাদার বিপরীত এবং হযরত খুলাফারাশেদীন আলাইহিমুস সালামহযরত সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের আমলেরও বিপরীত।কেননা উনারা কখনও নফল নামায জামায়াতে পড়েননি। (এলাউস সুনান ৭ম জিলদপৃষ্ঠা-৭৮)

    ১৮.তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া বিদায়াতে সাইয়্যিয়াহকেননা ওটা নফলের অন্তর্ভূক্ত। অর্থাৎ লোকদেরকেডেকে (ঘোষণা দিয়েতাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ তাহরীমী। আর ঘোষণা ব্যতীত যদি উর্দ্ধে তিনজনমুক্তাদী তাহাজ্জুদ আদায়কারীর পিছনে ঘটনাক্রমে ইক্তেদা করে ফেলেতবে মাকরূহ হবে না। (চারজন হলে মাকরূহতাহরীমী হবেআর তাহাজ্জুদ নামায (ঘোষণা দিয়েজামায়াতের সাথে আদায় করা বিদায়াতেসাইয়্যিয়াহ।(হাশিয়ায়ে শরহে বেকায়া লি ফাজেল চলপী)

    ১৯. ঘোষণা দিয়ে তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ তাহরীমীতবে ঘোষণা ব্যতীত ইমামের সাথে যদিতিনজন তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়েতবে মাকরূহ হবে না। আর ঘোষণা দেওয়ার অর্থ হলো ইমামের সাথে চারমুসল্লী ইক্তেদা করা। (যেটা সম্পূর্ণই মাকরূহ তাহরীমীঅনুরূপ দুরার কিতাবেও উল্লেখ রয়েছে। (ফতওয়ায়েসাদিয়াহ পৃষ্ঠা-৭২)

    ২০. হযরত শায়খ আবুল কাসেম হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি যিনি মিসরের ওলামায়ে মুতাআখখেরীন উনাদেরঅন্তর্ভূক্ত তিনি বলেননফল নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ তাহরীমী। কেননা এটা যদি মুস্তাহাব হতো এবং পাঁচওয়াক্ত জামায়াতের ন্যায় ফযীলতপূর্ণ হতোতবে যারা রাত্রে তাহাজ্জুদ নামায পড়েন। তারা ফযীলত অর্জনের লক্ষ্যেজামায়াতে তাহাজ্জুদ নামায পড়তেন। সুতরাং যেহেতু সাইয়্যিদুল মুরসালীনইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম  হযরত সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মধ্যে এরূপ আমল (অর্থাৎতাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়াপরিলক্ষিত হয়নাসেহেতু বুঝা গেল যেতাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়ার মধ্যেকোনই ফযীলত নেই (বরং মাকরূহ তাহরীমী) (মাবছূত লিস সারাখসী ২য় জিলদপৃষ্ঠা-১৪৪মাছাবাতাবিচ্ছুন্নাহ পৃষ্ঠা-৮৮)

    ২১. রমাদ্বান শরীফ মাস ব্যতীত বিতর নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ। রমলী বলেনশুধুমাত্র রমাদ্বান শরীফমাসেই বিতর নামায জামায়াতে পড়া যাবে। আর নিশ্চয়ই (রমাদ্বান শরীফ মাস ব্যতীতবিতর নামায জামায়াতেপড়া মাকরূহ তানযীহীর অন্তর্ভূক্ত। (বাহরুর রায়েক ১ম জিলদপৃষ্ঠা-৩৪৫মিনহাতুল খালিকআইনীশরহে হেদায়াখোলাসাতুল ফতওয়া ১ম জিলদপৃষ্ঠা-১৫৩মারাকিউল ফালাহ পৃষ্ঠা-২৫৬)

    ২২. বিতর নামায রমাদ্বান শরীফ মাস ব্যতীত জামায়াতে পড়া যাবে না। এটার উপর সমস্ত মুসলমানএকমত। (হেদায়া মায়াদ্দেরায়া ১ম জিলদপৃষ্ঠা-১৫১ফতহুল ক্বাদীর ১ম জিলদপৃষ্ঠা-৪০৯শরহেইলিয়াসশরহুন নেক্বায়াকেফায়াআহসানুল মাসায়িল পৃষ্ঠা-৪৫কূদুরী পৃষ্ঠা-৫২এলমুল ফিক্বাহ ২য়জিলদপৃষ্ঠা-২২৩)

    ২৩. আফসুস শত আফসুস এজন্য যেযে সকল বিদয়াতের চিহ্ন পর্যন্ত অন্যান্য সিলসিলায় দেখা যায়নাতা এইনকশবন্দীয়া তরীকার কারো কারো মধ্যে দেখা যাচ্ছে যেএলাকার আনাচে-কানাচে হতে লোক একত্রিত হয়ে বড়জামায়াতের সাথে তাহাজ্জুদ নামায আদায় করে থাকেযেটা মাকরূহ তাহরীমীর অন্তর্ভূক্ত।(মাকতুবাতে ইমামরাব্বানী ১ম জিলদপৃষ্ঠা-১৪৪ফতওয়ায়ে সিরাজিয়াগিয়াছিয়াশাফিয়াহনেহায়াকিতাবুজজিয়া,শরহে শামায়েল)

    ২৪.  নফল নামায জামায়াতে পড়া উচিৎ নয়কেননা সহীহ মত এটাই যেনফল নামায ঘোষণা দিয়ে জামায়াতেপড়া মাকরূহ তাহরীমী। আর ঘোষণা দেওয়ার অর্থ হলো চারজন মুসল্লী জামায়াতে শরীক হওয়াএটাসর্বসম্মতিক্রমেই মাকরূহ তাহরীমী। আর ইমাম ব্যতীত তিনজন মুক্তাদী হলে মাকরূহ হওয়ার মধ্যে মতবিরোধরয়েছে। একজন অথবা দুজন মুক্তাদী হলে মাকরূহ হবে না।(ফতওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ ১ম জিলদ,পৃষ্ঠা-২৪১)

    ২৫. তাহাজ্জুদ নামায ঘোষণা দিয়ে (অর্থাৎ ইমাম ব্যতীত চার মুক্তাদীসহজামায়াতে আদায় করা মাকরূহতাহরীমী। (আযীযুল ফতওয়া ১ম জিলদপৃষ্ঠা-২৪০)

    ২৬.  প্রশ্নঃ রমাদ্বান শরীফ মাস ব্যতীত নফল এবং তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া জায়িয আছে কি?

    উত্তরঃ তাহাজ্জুদ নামায ঘোষণা দিয়ে জামায়াতে পড়া মাকরূহ তাহরীমী। হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম তিনি রমাদ্বান শরীফ মাসের তিন রাত্র যে নামায জামায়াতের সাথে আদায় করেছেনতা হলো তারাবীহনামাযআল্লামা শামীর বর্ণনায়ও এটাই প্রমাণিত হয়। (ফতওয়ায়ে দেওবন্দ ৪র্থ জিলদপৃষ্ঠা-২২০)

    ২৭. পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাসে ঘোষণা দিয়ে বিতর  তারাবীহ জামায়াতে পড়া জায়িযশরীয়তসম্মত  সুন্নতএবং অন্যান্য নফল নামাযসমূহ তারাবীহ (বিতরইস্তেস্কাকুসূফব্যতীত রমাদ্বান শরীফ মাসেও ঘোষণা দিয়েজামায়াতে পড়া মাকরূহ তাহরীমী। (ফতওয়ায়ে দেওবন্দ ৪র্থ জিলদপৃষ্ঠা-২২৩)

    ২৮. প্রশ্নঃ শবে ক্বদরশবে মিরাজশবে বরাত ইত্যাদি রাতসমূহে মসজিদে একত্রিত হয়ে নফল নামায  ওজীফা পাঠকরা কি?

    উত্তরঃ  রাতসমূহে জাগ্রত থাকা মুস্তাহাব। এই রাতসমূহ মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট বহু বরকতময়রাতসমূহে যত বেশী ইবাদত করা যাবেততই ফযীলত অর্জন করা যাবে। কিন্তু নফল নামায জামায়াতে পড়াউচিত নয়। কেননা এটা বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ  মাকরূহ তাহরীমী। (গুনিয়াতুল মুসল্লী ১ম জিলদপৃষ্ঠা-৪১১,ফতওয়ায়ে দেওবন্দ ৪র্থ জিলদপৃষ্ঠা-২২৪ফতওয়ায়ে মাহ্মূদিয়া ২য় জিলদপৃষ্ঠা-১৬০)

    ২৯. প্রশ্নঃ তারাবীহ নামায ব্যতীত অন্যান্য নফল নামায ঘোষণা ব্যতীত জামায়াতে পড়া জায়িয কিনা এবং কোনসংখ্যা শর্ত আছে কি?

    উত্তরঃ দুররুল মুখতার কিতাবে আছেরমাদ্বান শরীফ মাস ব্যতীত নফল নামায জামায়াতে পড়নাকেননা নফলনামায ঘোষণা দিয়ে জামায়াতে পড়া মাকরূহ তাহরীমী। যদি চারজন মুক্তাদী জামায়াতে শরীক হয়। উল্লেখিতকিতাবের ইবারত হতে জানা গেল যেপ্রশ্নে উল্লেখিত অবস্থায় যদি মুক্তাদী একজন অথবা দুজন হয়তবে মাকরূহহবে না। আর যদি চারজন মুক্তাদী হয়তবে মাকরূহ তাহরীমী হবে। (ইমদাদুল ফতওয়া ১ম জিলদপৃষ্ঠা-৮৫)

    ৩০. চারজন মুক্তাদীসহ নফল নামায জামায়াতে পড়া সর্বসম্মতিক্রমে মাকরূহ তাহরীমী এবং তিনজন মুক্তাদী হলেমাকরূহ হওয়ার মধ্যে মতভেদ রয়েছে।(ইমদাদুল আহকাম ১ম জিলদপৃষ্ঠা-৫১৯)

    ৩১. প্রশ্নঃ  কোন কোন গ্রামে প্রচলিত রয়েছে যেকোন কোন হাফিয ছাহেব তাহাজ্জুদ নামাজে একজন অপরজনকেকুরআন শরীফ শুনায় এবং দুচারজন লোকও জামায়াতে শরীক হয় এবং একজন অপরজনের ঘরে গিয়ে ঘুম থেকেউঠায় এবং কোন কোন দিন বিনা ঘোষণায় সকলে মসজিদে একত্রিত হয়ে যায়। সুতরাং এরূপ জামায়াত জায়িযআছে কিনা?

    উত্তরঃ  নফল নামায চারজন মুক্তাদীসহ জামায়াতে পড়া তাহাজ্জুদ হোক অথবা অন্যান্য নফল নামায হোক,তারাবীহকুসূফইস্তেস্কা ব্যতীত আমাদের হানাফী মাযহাব মুতাবিক মাকরূহ তাহরীমী। চাই নিজে নিজে আসুকঅথবা ডেকে আনা হোক। তবে তিন মুক্তাদী হলে মাকরূহ হওয়ার মধ্যে মতভেদ রয়েছে এবং দুএকজন হলে মাকরূহহবে না। (ফতওয়ায়ে রশীদিয়া পৃষ্ঠা-২৯৯ফতওয়ায়ে রহীমিয়া ১ম জিলদপৃষ্ঠা-১৭৯)

    ৩২. প্রশ্নঃ নফল নামায জামায়াতে আদায় করাবিশেষ করে রমাদ্বান শরীফ মাসে তাহাজ্জুদ এবং আওয়াবীন নামাযজামায়াতে পড়া জায়িয বা নাজায়িয?

    উত্তরঃ  হাদীছ শরীফ দ্বারা যে সকল নফল নামায জামায়াতে পড়া প্রমাণিত রয়েছেতা ব্যতীত অন্য নফল নামাযজামায়াতে পড়া মাকরূহ তাহরীমী। ফিক্বাহর কিতাবে লিখা রয়েছেযদি ঘোষণা দিয়ে পড়া হয়আর ঘোষণাদেওয়ার অর্থ হলো চারজন মুক্তাদী জামায়াতে শরীক হওয়া। সুতরাং কুসূফ (সূর্য গ্রহণতারাবীহ  ইস্তেস্কার নামাযজামায়াতে পড়া জায়িয (এবং হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত ছাড়া অন্যান্য সকল নফল নামাজেই জামায়াতে পড়ামাকরূহ তাহরীমী। (ফতওয়ায়ে রহীমিয়াহ ১ম জিলদপৃষ্ঠা-১৭৯ইলমুল ফিক্বাহ ২য় জিলদপৃষ্ঠা-২২৩)

    ৩৩. হানাফী মাযহাব মুতাবিক ইমাম ব্যতীত চারজন মুক্তাদী জামায়াতে শরীক হলে উক্ত জামায়াত সর্বসম্মতিক্রমেমাকরূহ তাহরীমী হবে। আর যদি মুক্তাদী তিনজন হয়তবে মাকরূহ হওয়ার মধ্যে মতভেদ আছে। দুএকজন মুক্তাদীহলে যদিও বিনা মাকরূহে জায়িয কিন্তু ওটার মধ্যে জামায়াতের ফযীলত  সাওয়াব পাওয়া যাবে না। (আহসানুলফতওয়া ৩য় জিলদপৃষ্ঠা-৪৬৯)

    ৩৪. প্রশ্নঃ  তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতের সাথে আদায় করা কি?

    উত্তরঃ  তাহাজ্জুদ নামায ঘোষণা দিয়ে (অর্থাৎ চারজন মুক্তাদীসহজামায়াতে পড়া মাকরূহ তাহরীমী। (ফতওয়ায়েমাহমুদীয়া ২য় জিলদপৃষ্ঠা-১৬০)

    সুতরাং উপরোক্ত আলোচনা  বিস্তারিত দলীল-আদিল্লার দ্বারা এটা স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যেতাহাজ্জুদের নামাযরমাদ্বান শরীফ মাসে বা গায়ের রমাদ্বান শরীফ মাসেঘোষণা দিয়ে হোক বা বিনা ঘোষণায় হোক ইমামসহ চারজনমুক্তাদী জামায়াতের সাথে আদায় করাসম্পূর্ণ মাকরূহ তাহরীমী  বিদায়াতে সাইয়্যিয়াহ এবং তাহাজ্জুদ নামাযজামায়াতে পড়ার মধ্যে কোনই ফযীলত নেই। কেননা সাইয়্যিদুল মুরসালীনইমামুল মুরসালীন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাকছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামহযরত সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমতাবেয়ীনতাবে তাবেয়ীন,ইমাম মুজতাহিদ রমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা কেউ তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়েছেন বলে কেউ প্রমাণ পেশকরতে পারবেনা। কাজেই কেউ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের দাবিদার হলে তাকে অবশ্যই উপরোক্ত ফতওয়ামেনে আমল করতে হবেনয়তো দলীলের মাধ্যমে অর্থাৎ কুরআন শরীফহাদীছ শরীফইজমা  ক্বিয়াসের মাধ্যমেখন্ডাতে হবে। তবে আমার বিশ্বাস যেহেতু নির্ভরযোগ্য কিতাবের মাধ্যমে বিস্তারিত দলীলের মাধ্যমে ফতওয়া পেশকরেছি। সুতরাং কারো দ্বারাই এই ফতওয়া খন্ডান সম্ভব হবে নাইনশাআল্লাহ। মহান আল্লাহ পাক আমাদের সকলকেসহীহ ভাবে আমল করার তৌফিক দিন (আমিন)
    • Blogger Comments
    • Facebook Comments

    0 মন্তব্য(গুলি):

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    Item Reviewed: তাহাজ্জুদ উনার নামায জামায়াতের সাথে আদায় করা সম্পূর্ণ মাকরুহ তাহরীমী ও বিদায়াতে সাইয়্যিয়াহ Rating: 5 Reviewed By: Baitul Hikmah
    Scroll to Top