ই’তিকাফ-উনার ফযীলতঃ
হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, যে ব্যক্তি রমাদ্বান শরীফ-এর শেষ দশ দিন (সুন্নতে মুয়াক্কাদায়ে কিফায়া) ই’তিকাফ করবে, আল্লাহ পাক তাকে দুটি হজ্জ ও দুটি ওমরাহ করার সমতুল্য ছাওয়াব দান করবেন। আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে, আল্লাহ পাক তার পিছনের গুনাহখতা ক্ষমা করে দিবেন।আরো বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি একদিন ই’তিকাফ করবে, আল্লাহ পাক তাকে জাহান্নাম থেকে তিন খন্দক দূরে রাখবেন। প্রতি খন্দকের দূরত্ব পাঁচশত বছরের রাস্তা। সুবহানাল্লাহ!
ই’তিকাফ-উনার হুকুমঃ
ই’তিকাফ-এর অর্থ হলো- গুনাহ হতে বেঁচে থাকা, অবস্থান করা, নিজেকে কোন স্থানে আবদ্ধ রাখা, কোণায় অবস্থান করা ইত্যাদি। শরীয়তের পরিভাষায়- রমাদ্বান শরীফ-এর শেষ দশদিন (অর্থাৎ বিশ তারিখ বা’দ আছর একুশ তারিখ মাগরীবের পূর্ব হতে ঈদের বা শাওওয়াল মাসের চাঁদ দেখা পর্যন্ত) দুনিয়াবী যাবতীয় কার্যকলাপ ও পরিবার-পরিজন হতে ভিন্ন হয়ে, আলাদাভাবে পুরুষের জন্য জামে মসজিদে ও মহিলাদের জন্য ঘরে ইবাদত কার্যে মশগুল থাকাকে ই’তিকাফ বলে।
এক দিন, তিন দিন, পাঁচ দিন এবং সাত দিন ই’তিকাফ করলে সুন্নতে মুয়াক্কাদায়ে কিফায়া আদায় হবে না। অর্থাৎ ৩০শে রমাদ্বান-এর ১০ দিন কিংবা ২৯ দিনে রমাদ্বান শরীফ মাস হলে ৯ দিনের এক মিনিট কম হলেও সুন্নতে মুয়াক্কাদায়ে কিফায়া আদায় হবে না। ই’তিকাফ তিন প্রকার-ওয়াজিব, সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ ও নফল। যিনি ই’তিকাফ করেন তাকে মু’তাকিফ বলা হয়।
প্রত্যেক মসজিদে এলাকার তরফ হতে একজন মু’তাকিফ হলেই সকলের আদায় হয়ে যাবে। আর যদি কেউই ই’তিকাফ না করে, তাহলে সকলেরই সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ তরকের গুনাহ হবে।
ই’তিকাফের র্শতঃ
ই’তিকাফ-উনার শর্ত তিনটি। যথা:
·
পুরুষের জন্য মসজিদে, মহিলাদের জন্য ঘরের মধ্যে ই’তিকাফ করা।
·
ই’তিকাফ-এর জন্য নিয়ত করা।
·
রোযা রাখা।
বিঃ দ্রঃ ই’তিকাফ-উনার জন্য বালিগ হওয়া শর্ত নয়।
ই’তিকাফকারীর জন্য নিষিদ্ধ কাজঃ
ই’তিকাফ অবস্থায় জাগতিক ফায়দাদায়ক কাজ করা অবস্থাভেদে হারাম ও মাকরূহ তাহরীমী হবে।
·
মু’তাকিফ ব্যক্তি মসজিদে এসে কোন বেহুদা কথা বা কাজ করবে না বা চুপ করে বসে থাকবে না। বরং ঘুম ব্যতীত বাকি সময় ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল থাকতে হবে। যেমন- নফল নামায, কুরআন শরীফ তিলাওয়াত, যিকির-ফিকির করা, ইলম অর্জন করা ইত্যাদি।
·
ই’তিকাফকারী বিনা প্রয়োজনে এক সেকেন্ডের জন্য মসজিদের বাহিরে অবস্থান করলে ই’তিকাফ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
·
নির্জনবাস করা।
·
অন্যান্য অপছন্দনীয় কাজ থেকে বিরত থাকা। যেমন: অযথা গল্প-গুজব, কথা-বার্তা না বলা।
(এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে হলে- মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ-এর ১০০তম সংখ্যা পাঠ করুন।)
তথ্যসূত্রঃ আহ্কামু শাহরি রমাদ্বান

0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন