728x90 AdSpace

  • Latest News

    ১. আকরামুল আউয়ালীন ওয়াল আখিরীন, শাফিউল মুজনিবীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘শা’রে’ বা ‘শরীয়ত প্রণেতা’।

    সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শরীয়তের ধারক ও বাহক বা শরীয়ত প্রণেতা। তিনি যদি কোন জিনিসকে হারাম বলতেন, তবে তা চিরকালের জন্য হারাম হয়ে যেতো এবং কোন জিনিসকে হালাল বলতেন, তা চিরকালের জন্য হালাল হয়ে যেতো।
    নিম্নে তার কয়েকটি উদাহরণ বর্ণিত হলো-
    ১. একবার হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করলেন, “হে মানুষ! তোমরা হজ্জ করবে, হজ্জ করা তোমাদের উপর ফরয। জনৈক ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ পাক-এর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! প্রত্যেক বছরই কি হজ্জ করা ফরয? তার উত্তরে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “যদি আমি হ্যাঁ বলে, তবে প্রত্যেকের উপর প্রতি বছর হজ্জ করা ফরয হয়ে যাবে।” (মিশকাত শরীফ, মিরকাত শরীফ, লুময়াত, শরহুত ত্বীবী, তা’লীকুছ ছবীহ)
    ২. হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে বলেছিলেন, “হে আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আপনি হযরত ফাতিমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা-এর বিদায়ের পর তাঁকে গোসল দিবেন। অথচ কোন স্বামীই তার মৃত স্ত্রীকে গোসল দিতে পারে না। কারণ মৃত্যুর সাথে সাথেই বিবাহ সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। (শামী)
    ৩. হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জামাত সহকারে কয়েকদিন তারাবীহ্‌ নামায পড়ার পর তা ছেড়ে দেন। ছাড়ার কারণ প্রসঙ্গে বলেছেন, “যদি আমি এ নামায এভাবে সবসময় পড়ি, তবে তোমাদের উপর ফরয হবার আশঙ্কা রয়েছে, তাহলে এটা তোমাদের জন্য কষ্টকর হয়ে যাবে।” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
    ৪. একবার হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “পবিত্র মক্কা নগরীতে কেউই কাঁটাযুক্ত গাছ তুলতে পারবে না। কোন জন্তু শিকার করতে পারবে না।” হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, “হে আল্লাহ পাক-এর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দয়া করে ইজখার নামক ঘাস কাটার অনুমতি দান করুন। কেননা তা ঘরের চালে ব্যবহৃত হয় এবং কামারগণ কয়লার পরিবর্তে সেগুলো জ্বালিয়ে থাকে। তদুত্তরে তিনি বললেন, “হ্যাঁ, ইজখার কাঁটার অনুমতি দেয়া হলো। (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, শরহে নববী, ফতহুল মুলহীম)
    ৫. হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চাচা আবূ তালিব, যে ৪২ বছর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খিদমত করেছে। তাঁর ইন্তিকালের সময় হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “হে আমার চাচাজান আপনি কলেমা শরীফ পাঠ করুন।” উত্তরে আবূ তালেব বললো, “হে আমার ভাতিজা! এখন যদি আমি কলেমা শরীফ পড়ি, তাহলে মানুষ বলবে- ইন্তিকালের সময় সে তার ভাতিজার দ্বীন গ্রহণ করেছে।” তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “আপনি শুধু ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ বলুন, মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ বলার দরকার নেই। এতেই আপনার জন্য আমি সুপারিশ করবো।” (সুবহানআল্লাহ) অথচ কিয়ামত পর্যন্ত কেউ যদি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু বলে সে জান্নাতে যেতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত ‘মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম না বলবে। (সমূহ সীরাতের কিতাব)
    ৬. একবার একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এসে বললেন, ইয়া রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি ইচ্ছাকৃত একটি ফরয রোযা ভেঙ্গেছি, এখন আমি কি করবো? জবাবে নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তুমি একাধারে দু’মাস কাফ্‌ফারা স্বরূপ রোযা রাখ।” উক্ত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, আমি অসুস্থ এবং রোযা রাখতে অক্ষম। অতঃপর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তা না পারলে তুমি ষাটজন মিসকীনকে পেটপুরে দু’বেলা খাওয়াও।”
    তখন উক্ত ছাহাবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, ‘ইয়া রসূলাল্লাহ, ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি খুব গরীব এবং আমি মিসকীনদের খাওয়াতেও অক্ষম।” অতঃপর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “যদি তাও না পার, তাহলে একজন গোলাম আযাদ করে দাও।” তখন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার কোন গোলাম নেই।’ অতঃপর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তুমি কিছুক্ষণ বস।” এমন সময় এক ঝুড়ি বা এক টুকরি খেজুর হাদিয়া আসলো। তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উক্ত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে বললেন, “তুমি টুকরিটি নিয়ে যাও এবং মদীনা শরীফের দরিদ্রের মধ্যে বিলিয়ে দাও।” উক্ত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আরজ করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার চেয়ে গরীব মনে হয় মদীনা শরীফে আর কেউ নেই। তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তোমার কাফ্‌ফারা তুমিই খেয়ে ফেলো।” (সুবহানাল্লাহ)
    (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ, ফতহুল বারী, ওমদাতুল ক্বারী)
    উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা এটাই প্রতীয়মান হয় যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘শারে’ বা শরীয়ত প্রণেতা’, যা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনন্য মর্যাদা-মর্তবার বহিঃপ্রকাশ।
    • Blogger Comments
    • Facebook Comments

    0 মন্তব্য(গুলি):

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    Item Reviewed: ১. আকরামুল আউয়ালীন ওয়াল আখিরীন, শাফিউল মুজনিবীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘শা’রে’ বা ‘শরীয়ত প্রণেতা’। Rating: 5 Reviewed By: Baitul Hikmah
    Scroll to Top